আমাদের কর্মময় জীবনের একটা গুরুত্বপুর্ন অংশ জুড়ে রয়েছে ইমেইল।৯০ এর দশকের পর থেকে ইমেইল যখন কমন হয়ে যোায়,তারপর থেকে পুরো বিজনেস ওয়ার্ল্ড চেঞ্জ হয়ে গেছে। ইন্টারন্যাশনাল ডাটা কর্পোরেশনের এক গবেষনায় দেখা গেছে যে, কর্মীরা তাদের সাপ্তাহিক কাজের ২৮% ব্যয় করে ইমেইল পড়ে ও তার উত্তর প্রদান করে।
যখন আমরা দ্রুত ও আরো ভালোভাবে কাজ করার চেষ্টা করি। যেকোন ধরনের কমিউনিকেশনে আমাদের সামাজিক নিয়মনীতি ভুলে গেলে চলবে না ।
ইমেইল এটিকেটে যা করবেন ও যা করবেন না
১। ক্লিয়ার সাবজেক্ট লাইন থাকা
প্রতিদিন আমাদের ইনবক্সে শত শত ইমেইল আসে যা আমাদের কাজের গতি কমিয়ে দেয়। এসব ইমেইলের সাথে আপনাকে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় । সুতরাং সাবজেক্ট লাইন যত বেশি ক্লিয়ার হবে, ততবেশি আপনার মেসেজ পড়ার সম্ভবনা থাকে। উদাহরনস্বরুপ, আপনি কাউকে কোন প্রপোজাল পাঠাতে যাচ্ছেন, তাহলে সাবজেক্ট লাইন হতে পারে, ” The Fitch Proposal Is Attached”
২। আপনার সিগনেচার এড করতে ভুলবেন না
প্রত্যেক ইমেইলের সাথে একটা সিগনেচার থাকা উচিত যাতে রিসিপেন্টকে আপনার সম্পর্কে ওবং কিভাবে আপনার সাথে কন্টাক করা যাবে তা বলা থাকে। এটা অটোমেটিক্যালি সেট আপ করুন যা ইমেইলের শেষে দেখাবে। এতে আপনার কন্টাক ডিটেইলস এড করুন যেন রিসিপেন্টকে আপনার ঠিকানা, ইমেইল, ফোন নাম্বার খুজে পেতে সমস্যা না হয়।
৩। প্রফেশনাল অভিবাদন ব্যবহার করুন
‘Hey’ , ‘Yo’ , ‘Hiya’ এসব ব্যবহার করা প্রফেশনাল নয়। আপনি রিসিপেন্টকে যত ভালোভাবে চেনেন না কেন তার পরিবর্তে বরং ‘Hi’ বা ‘Hello’ ব্যবহার করুন। আরো বেশি ফরমাল হতে , Dear (Insert name) ব্যবহার করুন।যেমনঃ ‘Dear Asif’ . তবে মনে রাখবেন আপনাকে তার শর্ট নাম ধরে ডাকার পারমিশন থাকতে হবে।
৪। হিউমর ইউজ করবেন না
ইমেইলে হিউমর আসলে বুঝা যায় না, আপনি যা ফানি মনে করবেন তা অপরপক্ষ আপনার ভয়েস টোন ও ফেস এক্সপ্রেশনের সাথে পরিচিত না হলে ভুল ব্যাখ্যাও দিতে পারে অথবা সারকাজম হিসেবেও নিতে পারে। সুতরাং চেষ্টা করবেন বিজনেস কমিউনিকেশনে হিউমর এভয়েড করতে।
৫। ইমেইল লিখার পর আবার প্রফরিড করা
ইমেইল লিখার পর আবার পড়ে দেখুন সব ঠিক আছে কিনা। আপনার ইমেইলে যদি ভুল বানান ও গ্রামাটিক্যাল এররে ভরা থাকে তাহলে রিসিপেন্ট আপনাকে অলস, কেয়ারলেস এমনকি অশিক্ষিত মনে করতে পারে। ‘Send’ বাটনে চাপ দেয়ার আগে স্পেলিং, গ্রামার এবং মেসেজ চেক করুন।
৬। আপনি যা নিয়ে কথা বলছে তা সম্পর্কে রিসিপেন্ট জানে ভাববেন না
ইমেইলের শুরুতে স্ট্যান্ড-এলোন নোট লিখবেন, এমনকি তা চেইন ইমেইল হলেও। রিসিপেন্ট হয়ত ডেইলি শত শত ইমেইল পেতে পারে, আপনার ইমেইল মনে রাখবে তা আশা করা ঠিক নয়। অর্থ্যাৎ সাবজেক্ট এবং আগের মেসেজ, কনভারসেশন বা রিসার্চের রেফারেন্স দিন ইমেইলের শুরুতে।
৭। সব ইমেইল রিপ্লাই করুন
আপনার কাছে আসা প্রত্যেক লেজিমেট ইমেইলের সময়োপযোগী ও বিনয়ের সাথে রিপ্লাই দিন। এমনকি আপনার যদি সময় নাও থাকে সেন্ডারকে জানান যে আপনি ইমেইলটা পেয়েছেন।
৮। হুট করে রিপ্লাই দিবেন না
কখনো রাগের মাথায় হুট করে বা মুখ ফসকে কিছু লিখে ইমেইল পাঠাবেন না। মেসেজ পাঠানোর পুর্বে কিছুক্ষন চিন্তা করুন যা লিখছেন তা ঠিক আছে কিনা । যদি কোন কারনে রাগান্বিত থাকেন, তাহলে ইমেইল ‘ড্রাফট’ করে রাখুন। পরে মেজাজ ঠান্ডা হলে আরেকবার পড়ে রিপ্লাই দিন।
৯। প্রাইভেট ব্যাপারগুলো গোপন রাখুন
ইমেইলে সবকিছু শেয়ার করা সহজ, হয়ত সামনাসামনি বলতে পারতেন না। যদি আপনাকে হাইলি পারসোনাল বা কনফেডেনশিয়াল কিছু শেয়ার করতে হয়, পারসোনালি কথা বলে বা ফোনে শেয়ার করুন।ইমেইলের বডি বা এটাচমেন্টে কোন সেনসিটিভ জিনিস দেয়ার আগে পারমিশন নিয়ে রাখবেন।
১০। অতিরিক্ত এক্সপ্রেশন ব্যবহার করবেন না
এক্সাইটমেন্ট প্রকাশে বিভিন্ন ধরনের ইমোজি , abbreviations যেমন LOL বা সব ক্যাপিটাল লেটারে লিখা বিজনেস ইমেইলের সাথে মানায় না। সুতরাং এসব এভয়েড করার চেষ্টা করবেন যদি না রিসিপেন্টকে আপনি পারসোনালি বা ঘনিষ্টভাবে চিনে থাকেন ।
আপনার ইমেইল প্রফেশনাল করতে অভ্যাসের দরকার হয়, কিন্তু ভবিষ্যতে আপনাকে আরো বেশি সুন্দর ও গোছানো মনে হবে।